শীতকালে ফোটে এমন ৫০টি ফুলের নামের তালিকা
শীতকালে ফোটে এমন ৫০টি ফুলের নামের তালিকা, সেইসঙ্গে দেশি-বিদেশি ফুলসহ ফুলের চাষ পদ্ধতি, কিভাবে ফুলের গাছ পরিচর্যা করা যায় এবং শীতকালীন উপযোগী সঠিক চারা সংগ্রহ বা কিভাবে নির্বাচন করা যেতে পারে ইত্যাদি বিষয়ে জানতে নিচের আলোচনাগুলি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
যদিও আমরা অনেকেই জানি যে, শীতকালেই সবচেয়ে বেশি ফুল ফুটতে দেখা যায়, কিন্তু কোনগুলো শীতের ফুল বা কোন ফুল কোন সময় লাগানো যায়, তা আমরা অনেকেই জানিনা।
পেজ সূচিপত্রঃ শীতকালে ফোটে এমন ৫০টি ফুলের নামের তালিকা
শীতকালে ফোটে এমন ৫০টি ফুলের নামের তালিকা
ফুলের চাষ পদ্ধতি
কিভাবে পরিচর্যা করবেন
শীতকালীন উপযোগী সঠিক চারা সংগ্রহ
শেষকথা
শীতকালে ফোটে এমন ৫০টি ফুলের নামের তালিকাঃ
ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রকৃতিতেও তার প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। ফুল তেমনই একটি। আবার সব ঋতুতে যে সব ফুল ফোটে তাও কিন্তু নয়। বিশেষ করে শীতের সকালে যেমন একদিকে শিশিরের মুগ্ধতা ঠিক তেমনি অন্যদিকে ফুলের সমারোহ, অর্থাৎ নানা প্রকার ও নানা জাতের ফুল ফুটে বিশেষ করে এই শীতকালে। যদিও শীতকালে ফুল ভালো ফোটে, আর তার সংখ্যার অনেক। তবে বেশির ভাগই তা বিদেশি ফুল। কিন্তু রূপ-বৈচিত্রে এরা এতটাই মুগ্ধতা ছড়ায় যা অন্য কোন ঋতুতে মেলা ভার। যাইহোক শীতকালে ফোটে এমন ৫০টি ফুলের নামের তালিকা নিম্নে বর্ণিত হলোঃ
গাঁদা ফুল (Marigold) : গাঁদা সারা বিশ্বেই পাওয়া যায় আর বলাই বাহুল্য যে, এটি একটি অত্যন্ত পরিচিত ফুল আমাদের সকলের নিকট।
গোলাপ (Rose) : শীতকালে গোলাপ ফুলের অনেক প্রজাতী পাওয়া যায়। সাধারণত গোলাপ ফুলকে ফুলের রানী বলা হয়।
ডালিয়া (Dahlia) : ডালিয়া ফুলের আদিনিবাস মেক্সিকোতে, তাই একটি বিদেশি ফুল এবং অত্যন্ত সুন্দর।
চন্দ্রমল্লিকা (Chrysanthemum) : মূলত চন্দ্রমল্লিকা বিভিন্ন রঙের হয় থাকে, এটি বাগানে থাকলে বাগানের সৌন্দর্যই আলাদা হয়ে ওঠে এবং অনেকেই টবেও লাগিয়ে থাকে।
জিনিয়া (Zinnia) : জিনিয়া ফুল বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে, যা বাগানের সৌন্দর্যকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।
পিটুনিয়া (Petunia) : পিটুনিয়া ফুলটি টবে বা বাগানে চাষের জন্য খুবই চমৎকার।
জারবেরা (Gerbera) : ফুলটি অত্যন্ত উজ্জ্বল রঙয়ের হয়ে থাকে এবং বড় জাতের ফুল।
ডেইজি (Daisy) : দেখতে অত্যন্ত সুন্দর একটি ফুল।
কসমস (Cosmos) : এটিও একটি বিদেশি ফুল যা মেস্কিকো থেকে আগত খুবই জনপ্রিয় একটি ফুল। এই ফলটি হালকা ডালপালামুক্ত,যা বারান্দায় বা গেটের পার্শ্বে লাগালে বাড়ির সৌন্দর্যই অনেকটা পাল্টে যায়।
প্যানসি (Pansy) : এই ফুলটিও শীতকালে ফোটে, যা ছোট ও রঙিন ধরণের ফুল হয়ে থাকে।
পপি (Poppy) : ছোট ও রঙিন ধরণের ফুল হয়ে থাকে, যা শীতকালে বাগানে লাগালে তার বৈচিত্রই পাল্টে যায়।
গ্লাডিওলাস (Gladiolus) : এই প্রজাতীর ফুলটি লম্বা ডাটায় একসাথে অনেক ফুল ফোটে থাকে।
ক্যালেনডুলা (Calendula) : এই ফুলটি উজ্জ্বল কমলা এবং হলুদ রঙের ফুল হয়ে থাকে।
অ্যাস্টার (Aster) : মূলত এই ফুলটি বিভিন্ন রঙয়ের হয়ে থাকে।
স্ন্যাপড্রাগন (Snapdragon) : এই ফুলগুলিও লম্বা ডাটায় একসাথ বিভিন্ন রঙয়ের ফুল ফোটে থাকে।
ন্যাস্টারশিয়াম (Nasturtium) : অত্যন্ত চমৎকার একটি ফুল যা শীতকালে ফোটে। এটি একটি ঘন্টা আকৃতির ফুল এবং হলুদ বা কমলা রঙের হয়ে থাকে।
ফ্লক্স (Phlox) : মূলত ফ্লক্স ফুলটি গুচ্ছাকারে ছোট ছোট হয়ে থাকে, যা টবেও চাষ করা যায়।
শিউলি (Night-flowering Jasmine/Parijat) : শিউলি ফুলটি টবে বা বাগানে লাগানো যেতে পারে। ছোট ছোট সাদা ও কমলা মিশ্রিত ফুল শীতকালে হয়ে থাকে, যার গন্ধ অত্যন্ত সুমিষ্ট ও মনোরম।
হাসনাহেনা (Night-Blooming Jasmine) : হাসনাহেনা ফুলটিও শীতকালে হয়ে থাকে, বিশেস করে জানালার ধারে বা বাগানে লাগানে এর অত্যন্ত চমৎকার গন্ধে গোটা পরিবেশটাই একটি আলাদা বৈচিত্র্য বয়ে আনে।
নয়নতারা (Periwinkle) : এই ফুলটি টবে বা বাগানে লাগানো যায়। তবে নয়নতারা ফুলটি সারা বছরই ফোটে। ছোট ছোট পাঁচটি পাঁপড়ি সমৃদ্ধ এই ফুলটি কয়েকটি রঙের হয়ে থাকে।
গাজানিয়া (Gazania) : যদিও গাজানিয়া ফুলটি একটি শীতকালীন ফুল এবং এটি নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারী সথ্যে ফোটে। ফুলটি টবে বা বাগানেও লাগানো যেতে পারে। এই ফুলটি কয়েকটি রঙয়ের হয়ে থাকে, যা বাগানের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে বৈচিত্রতা আনে।
কারনেশান (Carnation) : কারনেশান ফুল বিভিন্ন রঙ ও সৌন্দর্যের কারণে অত্যন্ত জনপ্রিয়। এই ফুলটি বিশ্বে ভালোবাসা ও শুভেচ্ছার প্রতীক। যদিও এই ফুলটি বিদেশি হলেও কয়েকটি রঙের হয়ে থাকে যা টবে বা বাগানে লাগানো যেতে পারে।
ভারবেনা (Verbena) : এই ফুলটিও বিদেশি, তবে তা কয়েকটি রঙয়ের হয়ে থাকে। মূলত এই ফুলটি অক্টোবর থেকে নভেম্বরের মধ্যে চারা রোপনের উপযুক্ত সময়। এটি বাগানে ও টবে লাগানো যেতে পারে।
সুইট পি (Sweet Pea) : অত্যন্ত সুমিষ্ট গন্ধ এবং লতানো প্রকৃতির জন্য এই ফুলটি একটি ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সাধারণত এই ফুলটি শীতের শেষ থেকে বসন্তের শুরু পর্যন্ত ফুটে থাকে। এটিও বাগানে বা টবে লাগানো যেতে পারে।
সিলভিয়া (Salvia) : এটি একটি শীতকালীন ফুল। মূলত বসন্তের পুরো সময় ধরেই এই ফুল ফুটতে থাকে এবং অক্টোবর হতে নভেম্বর মাস চারা রোপনের উপযুক্ত সময়। ফুলটি তার সৌন্দর্যের কারণে গৃহসজ্জায় ব্যবহৃত হয়ে ধাকে।
ডায়ান্থাস (Dianthus) : ডায়ান্থাস ফুলটি সাদা, লাল, গোলাপি ও বেগুনি রঙযের হয়ে থাকে, যা বাগানে বা টবে অনায়াসেই লাগানো যেতে পারে। অত্যন্ত সুমিষ্ট গন্ধ এবং মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্যের কারণে এই ফুলটি সকলের নিকট অত্যন্ত জনপ্রিয়। সাধারণত শীতের শেষ থেকে বসন্তকাল পর্যন্ত এই ফুল ফোটে, তবে কিছু প্রজাতি আছে, যা হালকা ঠান্ডায় বা গ্রীষ্মকালেও ফুটে থাকে।
অ্যাজালিয়া (Azalea) : এই ফুলটি একটি জনপ্রিয় শীতকালীন ফুল। বিভিন্ন রঙয়ের এবং বিভিন্ন বর্ণের কারণে ফুলটি বাগানের সৌন্দর্যই পাল্টে দেয়। সাধারণত শীতের শেষে থেকে বসন্দের শুরু পর্যন্ত অ্যাজালিয়া ফুল ফুটে থাকে।
দোপাটি (Impatiens Balsamina) : যদিও দোপাটি ফুলটি গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালীন ফুল, তবে শীতকালেও এই ফুল ফুটে থাকে। বিভিন্ন মিশ্র রঙয়ের কারণে এই ফুলটি আলাদাই একটি সৌন্দর্য বহন করে। বিশেষ করে সাদা, বেগুনি, গোলাপি ও মিশ্র রঙয়ের হয়ে থাকে। এই ফুলটি টবে চাষ করা যায়।
লুপিন (Lupin) : লুপিন একটি শীতকালীন ফুল, যা শীতের শেষে এবং বসন্ত ঋতুর শুরু ফুটে থাকে। এটি একটি গুচ্ছবদ্ধ ফুল এবং বিভিন্ন রঙয়ের হয়ে থাকে। এর মনোমুদ্দকর সৌন্দর্যতা বাগানের পরিবেশটাকে একটি রাজকীয় ঢঙে রঙিন করে তোলে।
টিউলিপ (Tulip) : টিউলিপ একটি শীতপ্রধান অঞ্চলের ফুল। যদিও এটি বিদেশি ফুল, তারপরেও এটি বিভিন্ন রঙয়ের হওয়াতে তা বাগানে আলাদা একটি স্থানই দখল করে নেয়।
রজনীগন্ধা (Night Queen) : মূলত এটি শীতকালীন ফুল না হলেও বিভিন্ন জাতের রজনীগন্ধা শীতকালেও ফুল দিতে পারে। তবে প্রচন্ড শীতে এর ফুল ফোটা প্রভাবিত হয়ে থাকে। তবে এই ফুলটি সারা বছরই চাষ করা যায়।
জুঁই (Jasmine) : জুঁই একটি শীতকালীন ফুল। এটি শীতের শেষে বা বসন্তের শুরুতে কিন্তু হলুদ ফুল ধরে। ছোট্ট ছোট সাদা ঝোপ আকৃতির সুগন্থিহীন ফুল, যা বাগানে বা টবেও লাগানো যেতে পারে।
কামিনী (Murraya Paniculata) : যদিও কামিনী ফুল গ্রীষ্ম এবং বর্ষাকালে প্রচুর ফুল ফোটে তথাপিও এটি চিরহরিৎ উদ্ভিদ হওয়ায় তা শীতকালেও ফুল দিয়ে থাকে। অত্যন্ত সুগন্ধযুক্ত এবং শোভাময় একটি ফুলের গাছ হলো কামিনী।
মিমোসা (Mimosa) : এটি একটি শীতকালীন ফুল। শীতের শেষ থেকে বসন্তের শুরু পর্যন্ত এর ফুল ফুটে থাকে। মূলত এই ফুলের মিষ্টি সুগন্ধের জন্য সারা বিশ্বে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং পছন্দনীয় একটি ফুল। যদি একটি বিদেশী প্রজাতির ফুল, তথাপি টবে, বারান্দায়, ব্যালকনিতে বা বাগানেও লাগানো যেতে পারে।
স্টক (Stock) : স্টক ফুল কিন্তু শীতকালীন ফুল। এটি মূলত শীতের শেষ থেকে বসন্তের শুরু পর্যন্ত ফুটে থাকে। এর মিষ্টি সুগন্ধ এবং বাহারী রঙের কারণে বাগানে ও ফুলের সজ্জার ক্ষেত্রে খুবই জনপ্রিয় ও আকর্ষণীয়।
স্নোড্রপ (Snowdrop) : এই ফুলটি একটি সরু ডাটার উপরে ছোট ছোট সাদা রঙের হয়ে থাকে। সাধারণত এরা জানুয়ারি থেকে মার্চ বা এপ্রিলের মধ্যেই এদের ফুল ফুটে থাকে। উল্লেখ্য যে, স্নোড্রপ ফুলটি কিন্তু বরফের মধ্যে থেকেও ফুটে থাকে।
কলকে (Yellow Oleander) : যদিও এটি শীতকালীন ফুল নয় তথাপি শীতপ্রধান ফুলের তালিকায় এটি অন্তর্ভূক্ত হয়ে থাকে। হলুদ রঙের এই ফুলটির গন্ধ অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর এবং বাগানে বা টবেও লাগানো যেতে পারে।
হেলিক্রিসাম (Helichrysum) : হেলিক্রিসাম একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় শীতকালীন ফুল। এটি কাগজের ফুল বা স্ট্রফ্লাওয়ার নামেও অধিক পরিচিত। মূলত এটি শীতকালে ফোটে কাগজের মতো গঠন এবং উজ্জল রঙের কারণে এটি শীতকালীন সজ্জাতে বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
অ্যান্টিরিনাম (Antirrhinum) : এই ফুলটি বিদেশি হলেও তা শীতকালীন ফুল হিসেবে সমধিক পরিচিত। বিশেষ করে এটি ঠান্ডা আবহওয়াতে ভালো হয়ে থাকে। ফুলটি দেখতে অনেকটা ড্রাগনের মতো হওয়ায় একে ড্রাগন ফুল বা স্নাপড্রাগনও বলা হয়ে থাকে।
ক্যামেলিয়া (Camellia) : ক্যামেলিয়া ফুলটি শীতের শেষ থেকে বসন্তের শুরুতে ফুটে থাকে। এটি অত্যন্ত চমৎকার একটি ফুল, যার কারণে এই ফুলকে শীতকালীন গোলাপ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। এটি বাগানে বা টবেও লাগানো যেতে পারে আর এর সৌন্দর্যও অনেক মনোমুগ্ধকর ও আকর্ষণীয়ও বটে।
সাদা জবা (White Jaba) : যদিও ফুলটি সারা বছরই ফুটে থাকে এবং শীতকালে কিছু দেশি জাতের কিছু জবা ফুল দেয়া বন্ধ করে তথাপি শীতকালে জবা ফুল ফোটাতে বিশেষ যত্ন এবং পরিচর্যার প্রয়োজন ঘটে থাকে। বাগানে এই সাদা রঙের জবা ফুলটি বাগানের সৌন্দর্য অনেকাংশে বৃদ্ধি করে থাকে।
শাপলা (Shapla) : যদিও শাপলা বর্ষাকাল এবং শরৎকালের ফুল কিন্তু কিচু কিছু ক্ষেত্রে শীতের শুরুতে এবং অনেক সময় অসময়ে এই ফুল ফুটতে দেখা যায়।
পয়েন্সেটিয়া (Poinsettia) : এটি একটি শীতকালীন উদ্ভিদ। মূলত বড়দিনে এবং গৃহসজ্জা বাড়াতে এর কোন জুড়ি নেই। আসলে পয়েন্সেটিয়া এর উজ্জ্বল রঙের পাতা এবং ব্র্যাক্টগুলোর জন্য এটি খুবই সমাদৃত সকলের নিকট।
ফুলের চাষ পদ্ধতিঃ
সাধারণত শীতকালে ফুলের বীজ রোপনের ক্ষেত্রে উপযুক্ত সময় হলো অক্টোবর থেকে নভেম্বর। যদিও বাজারে টবসহ বিভিন্ন ফুলের গাছ কিনতে পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে যদি বাড়িতে বিশেষ কোন অকেশন বা প্রদর্শনীর জন্য টবসহ ফুল ফোটানো গাছ কিনেন, সেটা আলাদা বিষয়। কিন্তু যদি নিজস্ব টবে বা বাগানে কোন ফুল গাছ রোপন করতে চান তাহলে অবশ্যই টবের জন্য ৮ থেকে ১২ ইঞ্চি মাপের টবই যথেষ্ট হবে আপনার জন্য। যদি এর থেকে বড় টবে গাছ লাগাতে চান সেক্ষেত্রেও কোন সমস্যা নেই। তবে টবে বা বাগানে ফুলের চারা লাগানোর আগে পর্যাপ্ত পরিমাণে জৈব সার বা কম্পোস্ট সার মিশ্রিত করে তবেই চারা রোপন করুন। পাশাপাশি যখন চারা রোপন করবেন তখন একটি লাঠি চারার পাশে পুঁতে দিবেন, এতে করে ফুলের চারাটি সোজা হয়ে থাকবে। মনে রাখবেন, সব ফুলের চারাই যে হবে এমনটা নয়, স্মরণে রাখতে হবে যে, কোন সিজনে কোন কোন ফুল ফোটে এবং তা কখন রোপন করার উপযুক্ত সময়। আর তা না হলে চারা রোপন করার পর হয়তো সেই গাছ বড় হবে কিন্তু আশানুরূপ ফুল হয়তো পাবেন না।
কিভাবে পরিচর্যা করবেনঃ
সাধারণত ফুলের গাছ লাগানোর পর পানি দিতে হয়। সেক্ষেত্রে সম্ভব হলে ঝাঁঝর দিয়ে বৃষ্টির মতো পানি ছিটিয়ে দিতে হবে, আর যদি ঝাঁঝর না থাকে অন্য কোন উপায়ে তা করতে হবে। আমরা অনেকেই যেটা করি, তা হলো গাছ লাগানোর পর গোঁড়ায় পর্যাপ্ত পানি ঢেলে দিই। এটা মোটেও ঠিক নয়। কারণ গাছ লাগানোর পর সেই গাছে এমন ভাবে পানি দিতে হবে, যাতে করে গাছ এবং পাতা উভয়ই ভেজে। অনেক ফুলের গাছে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের প্রয়োজন হয়, আবার কিছু কিছু ইনডোর প্ল্যান্ট বা কিছু ফুলের গাছ আছে, যা অল্প আলোয়ও জন্মাতে বা হতে পারে। সে ধরণের বিষয়গুলি অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। এ ছাড়াও যদি নিকটস্থ কোন কৃষিবিদ বা কৃষি অফিস থাকে, প্রয়োজনে তাদেরও পরামর্শ নিতে পারেন। সর্বোপরি, বর্তমানে ইউটিওব থেকেও দেখে নিতে পারেন।
শীতকালীন উপযোগী সঠিক চারা সংগ্রহঃ
সাধারণত শীতকাল শুরুর সময় থেকেই আপনাকে চারা সংগ্রহের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। অর্থাৎ ফুলের চারা সংগ্রহ করতে আপনার নিকটস্থ এগ্রিকালচার ফার্ম বা স্থানীয় নার্সারি গুলোতে খোঁজ নিতে পারেন। সেখানে গিয়ে আপনি কোন দেশি-বিদেশি কোন ধরণের ফুল গাছ এবং তা কোথায় লাগাতে চাচ্ছেন, তা খোলাখুলি তার সাথে পরামর্শ করতে পারেন। তবে কারও পরামর্শ ছাড়াই আপনি শীতকালীন ফুল হিসেবে বড় বড় ইনকা গাঁদা, ছোট চায়না গাঁদা, রক্ত গাঁদা, রাজ গাঁদা, জাম্বো গাঁদা ইত্যাদি বিভিন্ন ধরণের গাঁদার ফুল লাগাতে পারেন। আবার যদি আপনি বারান্দ বা গ্রিলের ঝুলানো টবে কোন গাছ লাগানোর চিন্তা করেন, তাহলে পিটুনিয়া, অ্যাস্টার, ভারবেনা এবং ন্যাস্টারশিয়াস ইত্যাদি লাগাতে পারেন। যদি মনে করেন যে, এমন গাছ লাগাবো যেটি বারান্দার গ্রিলের সাথে লতিয়ে থাকবে, তাহলে মর্নিং গ্লোরি, নীলমণি লতা, সুইট পি বা রেল লতাও লাগাতে পারেন। যদি টবে লাগাতে চান, সেক্ষেত্রে ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, জারবেরা, কারনেশান, ক্যালেনডুলা ইত্যাদি জাতীয় ফুলের গাছ লাগাতে পারেন।
শীতকালে ফোটে এমন ৫০টি ফুলের নামের তালিকা-শেষকথাঃ
আসলে অন্য ঋতুর থেকে শীতকালেই বেশি ফুলের সমারোহ লক্ষ্য করা যায়। দেশি-বিদেশিসহ নানা জাতের নানা বর্ণ, গন্ধের ফুল ফোটে এই শীতকালেই। তাই আজকের শীতকালে ফোটে এমন ৫০টি ফুলের নামের তালিকা সহ অন্যান্য বিষয়গুলি আশা করি বুঝতে পেরেছেন। বিশেষ করে ফুল গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে একটা বিষয় অবশ্যই খেয়াল করতে হবে যে, কোন ফুল লাগানো যায়।
আরও পড়ুন: সারা বছর কোন কোন ফুল ফোটে - বারোমাসি ফুলের নামের তালিকা - কিভাবে টবে ফুল গাছ লাগানো যায়
যাইহোক, আজকের শীতকালে ফোটে এমন ৫০টি ফুলের নামের তালিকা বিষয়ক আলোচনায় আপনার দীর্ঘক্ষণ সম্পৃক্ততা ও উপস্থিতির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি এবং সেইসঙ্গে উপরোক্ত বিষয়ে যদি আপনার কোন পরামর্শ/মন্তব্য থাকে, তাও কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাতে পারেন। পরিশেষে শীতকালে ফোটে এমন ৫০টি ফুলের নামের তালিকা বিষয়ক আলোচনাগুলি যদি আপনার উপকারে আসে তাহলে তা অন্যদের শেয়ার করতে পারেন।

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url